ব্যাংক লোন কিভাবে নেবেন- বাংলাদেশের সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক
প্রিয় দর্শক ব্যাংক লোন কিভাবে নেবেন- বাংলাদেশের সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক এ সম্পর্কে হয়তো আপনি অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সঠিক তথ্যটি খুঁজে পাচ্ছেন না। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব যা আপনাকে ব্যাংক লোন কিভাবে নেবেন- বাংলাদেশের সবচেয়ে কম সুদের লোন দেয় কোন ব্যাংক এ বিষয়ে ধারণা দেবে। এ বিষয়ে জানতে হলে আপনাকে মনোযোগ সহকারে সমস্ত আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
প্রিয় দর্শক এখানে আমরা আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করছি তার মধ্যে কোন ব্যাংক সহজে ঋণ দেয়, কোন ব্যাংকে বেশি সুদ দেয় উল্লেখযোগ্য। এরকম আরও তথ্য পেতে সমস্যা আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে দেখুন এবং পড়ুন।
ভূমিকা
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক নিচে থাকায় অনেক শ্রেণীর মানুষই রয়েছে যারা ব্যাংক লোন নিয়ে অনেক দ্বিধায় থাকেন। আজকে ব্যাংক লোন নিয়ে পরিষ্কার আলোচনা করা হবে। আজকের মূল বিষয়বস্তু হবে ব্যাংক লোন কিভাবে নেবেন- বাংলাদেশে সবচেয়ে কম শুধু লোন দেয় কোন ব্যাংক এই বিষয়টির ওপর।
ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার ও কি কি
ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হল ব্যাংক একটি অ্যাকাউন্ট রাখতে হবে। ব্যাংক একাউন্ট বিভিন্ন ধরনের হয় কিন্তু সাধারণত নির্দিষ্টভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কত প্রকার বলতে গেলে চার প্রকার ধরা যায়। সেগুলো হলো-
১.চলতি হিসাব
: চলতি হিসাব হলো এমন এক ধরনের হিসাব যা যেকোনো বয়সের সেটা প্রাপ্তবয়স্ক বা কোন অল্প বয়সের মানুষ হোক বা কোন প্রতিষ্ঠান হোক তারা এ ধরনের ব্যাংক একাউন্টটি খুলতে পারবে। চলতি হিসাব সাধারণত একক নামে খোলা হয়। প্রতিষ্ঠানের নামে এ ব্যাংক একাউন্ট খুললে যারা যারা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকে তাদের পরিচালনাকারীকে যোগ করা হয়। আবার পরবর্তীতে এটি পরিবর্তনও করা যায়।
এখন সাধারণত এক ব্যবসায়িক হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ব্যবসায়িক লেনদেনের কারণে এই হিসাব-কাতটি খোলা হয়। এই অ্যাকাউন্ট এর জন্য বছরে একটি প্রযোজ্য ফি দিতে হয় যেটা ব্যাংক ভেদে বিভিন্ন হতে পারে। ব্যাংক যেহেতু বিভিন্ন হতে পারে সেহেতু এই অ্যাকাউন্টের জন্য ডেবিট কার্ড, ওভার ড্রাফ্ট, চেকবুক ,গ্যারান্টি কার্ড প্রভৃতি সুবিধা পাওয়া যায়।
২.সঞ্চয় হিসাব:
এ ধরনের অ্যাকাউন্ট সাধারণত কিছু কার্যক্রম যেমন সঞ্চয় কেন্দ্রিক হয়ে থাকে এজন্য খোলা হয়। এটি সাধারণত সেভিংস একাউন্ট বা সঞ্চয় হিসাব হিসেবে মূলত টাকা জমা রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। যে কোন বয়সের ব্যাক্তি এই সেভিংস একাউন্ট বা সঞ্চয় হিসাব খুলতে পারে। তবে সঞ্চয়ের জন্য অ্যাকাউন্টটি খুললেও অনেক সময় লেনদেন করা সম্ভব হয়ে ওঠে বা সম্ভব হয়।
তবে এক্ষেত্রে লেনদেনের যে টিপি টি রয়েছে সেটা কম থাকে। এক্ষেত্রেও গ্রাহকের আয়ের উৎস নির্ভর করে। এই সঞ্চয়ী হিসাব বা সেভিংস অ্যাকাউন্টটি সাধারণত ব্যবহার করে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সরকারি কর্মকর্তা পেনশন পাওয়ার জন্য এবং শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে থাকে।
তবে যারা প্রবাসে থাকে অর্থাৎ দেশের বাইরে যারা কাজ করে তারা তাদের স্ত্রী সন্তানদের জন্যও ব্যক্তিগতভাবে এ সঞ্চয় করে রাখতে পারে। এক্ষেত্রে একটি মজাদার বিষয় হলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা রাখলেও ব্যাংক থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা বা সুদ প্রদান করে থাকে ব্যাংক।
৩. রিকিারিং ডিপোজিট হিসাব
এ একাউন্টটি খোলা হয় নির্দিষ্ট সময়সিমায় টাকা ব্যাংকে জমা রেখে উচ্চ মুনাফা অর্জন করা। এধরনের হিসাব সাধারণত করা হয়ে থাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রতি মাসে জমা করতে হয় এতে বছরে বড় অংকের একটি টাকা পাওয়া সম্ভব হয়। তবে এই হিসাব এর মুনাফার হার ও মেয়াদ ব্যাংক ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে বেশ কিছু ব্যাংক থেকে জানা গেছে তারা প্রায়ই তিন বছর থেকে ১০ বছর বা এর থেকেও বেশি ১৫ বছর পর্যন্ত দিয়ে রাখতে পারে।
৪.ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট
এ একাউন্টে এমন একটি অ্যাকাউন্ট যা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে জমা করা হয়। তবে এতে একটি শর্ত থাকে সেটি হচ্ছে জনাকৃত অর্থ কখনো মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে উত্তোলন বা ভাঙ্গা যাবে না। তবে গ্রাহক যদি সময়ের পূর্বেই উত্তোলন করে তাহলে এমনও হতে পারে গ্রাহক কম মুনাফা পেতে পারে অথবা মুনাফা পাবেনা।
এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে বছর নির্দিষ্ট করার আগে ভেবে রাখতে হবে কখনো কোনো সমস্যা আসতে পারে কিনা। এক্ষেত্রে আবার দেখা গেছে অনেক গ্রাহকই মাসিক ভিত্তিতে মুনাফা গ্রহণ করে থাকে। তবে শর্ত একটাই মেয়াদের আগেই টাকা উত্তোলন করে নিলে গ্রাহক যে মাসিক ভিত্তিতে মুনাফা গ্রহণ করেছে তা তার মূল টাকা থেকে কেটে নেওয়া হবে।
আরেকটি হিসাব রয়েছে যার নাম ঋন হিসাব। ঋণ হিসাবটি হল এমন একটি হিসাব যা গ্রাহক যখন ইচ্ছা তখনই নেওয়ার জন্য ব্যাংকের আবেদন করতে পারবে। এই হিসাবটি হল এমন একটি হিসাব যা অতি প্রয়োজনে টাকা না থাকলে ব্যাংক থেকে টাকা নেওয়ার জন্য আবেদন করলে ব্যাংক সেটি গ্রহণ করলে এবং যুক্তিযুক্ত মনে করলে তাকে ঋণ দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক
ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য কোন ব্যাংকে সবচেয়ে কম ঋণ দেয় এটি জানা সব থেকে বেশি জরুরী। অনেকে আছে যারা বিভিন্ন কারণে ব্যাংক লোন নিতে যাচ্ছেন এক্ষেত্রে আপনারা জানতে চান বাংলাদেশে সবচেয়ে কম লোন দেয় কোন ব্যাংকে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় সব ব্যাংকগুলোতে বিভিন্ন খাতে লোন দেওয়া শুরু করেছে। বাংলাদেশে সবথেকে কম সুদলন দেয় এমন তিনটি ব্যাংক হল- এবি ব্যাংক
- ব্র্যাক ব্যাংক
- বেসিক ব্যাংক
১. এবি ব্যাংক
এবি ব্যাংকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রায় বলতে গেলে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি বেসরকারি ব্যাংক হচ্ছে এবি ব্যাংক। তবে বাংলাদেশের সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় এ বি ব্যাংক। এবি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাইলে ৭.৪৩% সুদে লোন নিতে পারবেন।
যারা এখন পর্যন্ত খুঁজে চলেছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক তারা এই ব্যাংকটি প্রথম পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন। নিজের ব্যক্তিগত ধরনের ক্ষেত্রে এবি ব্যাংক ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকে। তবে শুধু লোন নিলেই হবে না আপনাকে লোন নেওয়ার জন্য উপযুক্ত একটি কারণ দেখাতে হবে। এবং লোনের মেয়াদ অবশ্যই সর্বোচ্চ ৫ বছর থেকে ৬০ মাস রাখবেন।
২. বেসিক ব্যাংক
যারা এখনো খুঁজে চলেছেন আর কোন কোন ব্যাংক বাংলাদেশে সব থেকে কম সুদে লোন দেয়, তাদের দ্বিতীয় পেছনে তালিকায় বেসিক ব্যাংক থাকতে পারে। কেননা বেসিক ব্যাংকও ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ২০ লক্ষ টাকা লোন দিয়ে থাকে ৮% সুদে ।
৩.ব্র্যাক ব্যাংক
ব্র্যাক ব্যাংক ও একটি এমন ব্যাংক যা প্রয়োজনীয় লোন নেওয়ার জন্য ২০ লক্ষ টাকা লোন দিয়ে থাকে ৯% সুদে। কোনো প্রয়োজনীয় কাজ যদি লোন নাও খুব দরকার হয়ে ওঠে তাহলে এই তিনটি ব্যাংক আপনি আপনার পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন। এবং ব্যাংকের মতো লোন প্রসেসিং ফি নিয়ে থাকে ২% ।
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা খরচ হয়
অনেকেই জানতে চান বাংলাদেশ সবচেয়ে কম সুদের লোন দেই কোন ব্যাংক ।এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো নাম জানলেও এবং কোন অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এটা জানলেও জানতে চান ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে কত টাকা খরচ হয় বা হবে। এক্ষেত্রে সঞ্চয় হিসাব খোলার জন্য ৫০০ টাকা আর চলতি হিসাবের জন্য এক হাজার টাকা জমা দিলেই সেই হিসাব খোলা হয়।তবে বিশেষ কিছু হিসাব করার জন্য এই ক্ষেত্র বা এই শর্ত প্রযোজ্য হবে না। দ্বিতীয়ত সঞ্চয় হিসাব খোলার জন্য আপনাকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যাংকে জমা রাখলেও কোন টাকা দিতে হয় না। তবে সঞ্চয়ী হিসেবে খুললে এবং দশ হাজারের উপরে টাকা রাখলে সে ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ একটি ফি লাগে। এক্ষেত্রে ২৫ হাজার টাকা রাখলে ১০০ টাকা এবং দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ২০০ টাকা।
আবার 10 লাখ টাকা পর্যন্ত ২৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে কিছু কিছু ব্যাংক ৩০০ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ফি আদায় করতে পারে, এর থেকে বেশি তারা আদায় করতে পারবেনা। চলতি হিসেবের ক্ষেত্রে প্রতি ছয় মাস পর পর সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা আদায় করতে পারবে তবে স্পেশাল নোটিশ ডিপোজিট হিসেবে রাখলে ছয় মাসে সর্বোচ্চ 500 টাকা নিতে পারবে। এক্ষেত্রে আরো কিছু নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো-
১. কোন ব্যক্তিটি চাই ব্যাংকের একটি শাখা থেকে অন্য একটি শাখায় টাকাটি স্থানান্তর করবে সেক্ষেত্রে একই শহর হলে ৫০ টাকা এবং অন্য শহর বা জেলা হলে ১০০ টাকা আদায় করতে পারবে।
২. সঞ্জয় হিসেবে কোন টাকা আদায় করতে পারবে না ১০ হাজার টাকা অব্দি।
৩. চেক বই ইস্যু করতে যে খরচ হয় সেটি খরচের ভিত্তিতে ফির নির্ধারণ করতে হয়।
৪. যদি কোন ব্যক্তি বছরে দুইবার স্ত্রী নিশ্চিত করা সনদ এবং ব্যালেন্স কনফার্মেশন সার্টিফিকেট নিতে চাই তাহলে কোন প্রকার ফ্রি দিতে হবে না। কিন্তু দুইবারের বেশি নিতে চাইলে প্রতিবার ১০০ টাকা করে দিতে হবে।
বিনা জামায়াতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক
কখনোই কোন কিছু বিনিময়ে কাউকে কোন কিছু দেওয়া হয় না। এক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার বিষয়টিও একটি বড় ব্যাপার। বিনা জামাতে ঋণ নিতে চাইলে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে। কারণ একমাত্র বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংক কোন জামানত ছাড়া ঋণ দেয়। গ্রামীণ ব্যাংকটি হচ্ছে বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে দরিদ্র পীড়িত মানুষের কাছে জামানত ছাড়া ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া। এ ব্যাংকটি প্রথম সূচনা করে মোঃ ইউনুস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ১৯৭৬ সালে। এ ব্যাংক থেকে সহজেই বাংলাদেশের সবচেয়ে কম সাধারণ দেশ কোন ব্যাংক, আপনি লোন নিতে পারবেন কোন জামানত ছাড়া
লেখকের মন্তব্য
লোন কিভাবে নেবেন- বাংলায় সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক এ বিষয়ে আপনারা জানতে পেরেছেন। খেয়াল রাখবেন যে কোন লোন নেওয়ার সময়ই নির্দিষ্ট পরিমাণ এবং নির্দিষ্ট সময়সীমা ঠিক রেখে লোন নেওয়ার। এবং জরুর একটি বিষয় মাথায় রাখবেন কোন প্রয়োজনে জামানত কাউকে না পেলে গ্রামীণ ব্যাংক আপনাকে কোন জমানো ছাড়াই ঋণ দিতে প্রস্তুত তবে সেটি হবে ক্ষুদ্র আকারের।আমারে আর্টিকেলটা যদি আপনার উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই পরিচিত বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। সবাই ভাল থাকবেন এবং দোয়া রাখবেন। নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন যদি আমার আর্টিকেলগুলো আপনার পছন্দ হয়ে থাকে এবং আর্টিকেলের মধ্যে কোন ভুল থাকলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url